Hair style
Sunday, April 28, 2024
Saturday, April 27, 2024
Tuesday, April 16, 2024
Saturday, April 13, 2024
বিবেক
‘কোথায় যাচ্ছিস দিভাই ?’
‘পড়তে‘
‘বরুণ স্যারের বাড়ি?‘
‘ হ্যাঁ’
‘আমার এই অঙ্কগুলো একটু দেখিয়ে দিবি রে ? পারছি না।‘
‘পারছিস না? কালই তো বুঝিয়ে দিলাম।‘
‘আমি তো আর, তোর মতো অত বুদ্ধিমান মেয়ে নই !আর একবার দেখিয়ে দে না রে দিভাই ।‘
‘আচ্ছা। দাঁড়া,কই দে।‘
‘এই না হলে আমার দিভাই। আই লাভ ইউ।‘
‘আরে ঠিক আছে, ঠিক আছে। ছাড়, ছাড়।‘
রামপুরহাটের নিশ্চিন্তপুর। প্রতীকবাবুর সামান্য একটা গোলদারি দোকান। তবু সংসারটাকে ঠিক সামলে রেখেছেন। ওনার দুই মেয়ে। পূর্বা আর পৃথা দুই পিঠোপিঠি বোন ।মাত্র দু' বছরের ছোট-বড়। একেবারে একই স্বভাব, একই গলার স্বর ।যদিও পূর্বা ফর্সা, সুন্দরী আর পৃথার একটু চাপা রং, দেখতেও তেমন সুন্দরী নয়। দুজনে খুব ভাব, খুব মিল। শুধু দুই বোন বলে নয়, ওরা একে-অপরের সবচেয়ে ভালো বন্ধুও,যেন হরিহর-আত্মা। সবাই জানে দু'বোনের এমন মনের মিলের কথা।প্রতীকবাবু ওদের একই স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। দুজনেই পড়াশোনায় ভাল। দিদি পূর্বা, খুব খেয়াল রাখে ছোট বোন পৃথার ,প্রাণ দিয়ে ভালবাসে দুজনে দুজনকে। পৃথাও দিদি বলতে অজ্ঞান, দিদিই তার টিচার ।দিদিই সবকিছু দেখিয়ে দেয়। পড়াশোনা, ছবি আঁকা, খেলাধুলা যাই হোক না কেন।
‘হ্যাঁরে, তুই আমাকে বেশি ভালবাসিস, না মাকে?’ পৃথা জিজ্ঞেস করেছিল একদিন। ‘মা তো সবার চেয়ে আলাদা। কিন্তু তোর চেয়ে বেশি কাউকে ভালোবাসি না রে বোনু।‘ সটান বলে দেয় পূর্বা, একটুও ভাবতে হয় না। ‘তাহলে আমি যা চাইব, দিবি?’পৃথা আবদার করে।
‘হ্যাঁ ,বল না ।‘
‘তোর জিওমেট্রি বক্সটা দে না ।আমারটা খারাপ হয়ে গেছে।‘
‘কি করে হল? নিশ্চয়ই হাত থেকে ফেলেছিলি!’পূর্বা মৃদু বকুনি দেয়। ‘হ্যাঁ’,মুখ কাঁচুমাচু করে বলে পৃথা।
‘ঠিক আছে নে। কিন্তু আর যেন নষ্ট না হয় ।তোরটা আমাকে দিয়ে দিস, আমি চালিয়ে নেব।‘
‘আই লাভ ইউ দিভাই।‘আনন্দে চেঁচিয়ে ওঠে পৃথা।
এইভাবেই বেশ চলছিল।হঠাৎই এই দুই বোনের মধ্যে, এসে পড়ল একটি ছেলে। পূর্বা তখন পড়ে ক্লাস টুয়েলভে। হঠাৎই বরুণস্যারের কোচিংএ আলাপ হল রুপমের সঙ্গে ।একটা ছটফটে দুরন্ত ছেলে ,তার সঙ্গে তার স্বপ্নীল চোখ আর পড়াশোনায় দারুণ রেকর্ড। দুজনেরই ভালো লেগে যায় দুজনকে ।কোচিং যাওয়া-আসার পথে, একটুখানি পথ একসঙ্গে চলা ,এই ছিল ওদের অস্ফুট প্রেম।
‘দিভাই, তুই কার বাইকে চেপেছিলি রে সেদিন? কোচিং থেকে ফেরার সময় ?’ পৃথা জেরা করে।
‘আমি? কার আবার বাইক?’
‘কার বাইক ?আমি দেখিনি ভাবছিস? ফর্সা মতো ছেলেটা, কালো টি শার্ট পরেছিল।হুস্ করে চলে গেলি সামনে দিয়ে। আমি তখন তারকদার দোকান থেকে নেলপালিশ কিনছিলাম। দেখতেই পেলিনা আমাকে‘, পৃথা গড়গড় করে বলে দেয়। ‘ও কিছু না । আমার সঙ্গেই কোচিংএ পড়ে। পা টা মচকে গেছিল তো, তাই ও একটু এগিয়ে দিয়েছিল‘, পূর্বা ব্যাপারটা সামলাতে চেষ্টা করে। ‘পা মচকে গেছিল? কই দেখা তো ?আমাকে লুকাচ্ছিস?’, পৃথা ছাড়বার পাত্রী নয়। ‘যা সত্যি ,তাই বললাম।‘ এবার একটু রেগে যায় পূর্বা। ‘দি-ভা-ই,তুই প্রেম করছিস!আর আমাকে বললি না !’,চোখে জল চলে আসে পৃথার।
‘বলছি তো...’
‘থাম দিভাই ,তুই আমাকেও লুকোচ্ছিস? ঠিক আছে আর তোর সঙ্গে কথা বলব না।‘ পৃথা মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে যায়। ‘আচ্ছা, আচ্ছা, বলছি বাবা‘,পূর্বা বোনের মান ভাঙায়,‘ও রুপম’।
‘রুপম? তোর ক্লাসে পড়ে?’
‘হ্যাঁ,বিদ্যাভবনে।‘
‘কি করে আলাপ হল রে?বরুণস্যারের কোচিংএ ?’
‘হ্যাঁ, বাড়িতে কিছু বলবি না, বল।‘
‘বলব না ,এই কথা দিলাম।‘, বুকে হাত দিয়ে প্রতিজ্ঞা করে পৃথা।
‘কি ভাল ছেলে জানিস? আমাকে রোজ বাইকে উঠিয়ে একটা চক্কর লাগানো চাই’ই।‘
‘এতদূর? আমাকে আগে বলিসনি কেন ?’,পৃথা যেন কেঁদেই ফেলে।
‘আচ্ছা, আচ্ছা, সরি। সব বলব তোকে।হল? চোখের জল মোছ আগে।‘
‘আর আমার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিবি তো ?’,মুহূর্তে উৎসাহ ঝরে পড়ে পৃথার গলায়। চোখের জল উধাও। ‘হবে, হবে ।সব হবে। এত উতলা হোস না তো।‘, পূর্বা একটু লজ্জা পায়। ‘কোথায় কোথায় ঘুরতে গেছিস ,বল না।তোকে কি কি বলে রে? তোর গায়ে টাচ করেছে?’ পৃথা ব্যাগ্র হয় সব জেনে ফেলতে।‘
‘ওফ্ ,তুই না !আরে সবে তো কয়েকমাসের পরিচয়। তুই পারিসও বটে।‘
‘ইস্ দিভাই,তুই ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিস !বাবা দেখে ফেললে কি হত বলতো?’, পৃথা উদ্বিগ্ন হয়।
‘খুব ভয় করে রে। বাবা যা রাগী!জানতে পারলে স্কুল-কোচিং সব ছাড়িয়ে দেবে। প্লিজ বোনু, বাবা যেন না জানে।‘
‘আরে, বাবা জানবে কেন ?তোর কোন চিন্তা নেই। শুধু আমাকে একটু রুপমদার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিসনা ।‘
‘আচ্ছা দেবো এখন।‘
কিন্তু সমস্যা শুরু হল তখনই। যখন রুপমের সঙ্গে পরিচয়ের পর, তার কথা বলা, তাকানো, স্টাইল, সব কিছু ভাল লেগে যায় পৃথারও। মুখে কিছু বলতে পারে না, দিদির বয়ফ্রেন্ড বলে কথা। চোরাচাউনিতে চেয়ে থাকে শুধু, চোখে মুখে মুগ্ধতা।
‘রুপমের সঙ্গে তুই অত কি বকবক করিস রে? তোর জন্য, আমাদের ভাল করে কথাই হয় না‘,পূর্বা একদিন রেগেমেগে বলেই ফেলে আদরের বোনকে।
‘আমি আবার কি কথা বললাম রে দিভাই! রুপমদাই তো জিজ্ঞেস করল,”কি পড়, কি কর” এইসব।’
‘রুপম বলল ?আর তুই যে আগ বাড়িয়ে আমার নামে এত কথা গড়গড় করে বলে দিলি? আমি কখন উঠি, কখন পড়ি,কখন কি করি। স-ও-ব।‘
‘আরে রুপমদাই তো জানতে চাইছিল।‘
‘সে ঠিক আছে,কিন্তু তার সঙ্গে তোর নিজের কথা, এত বকবকানি না করলে হচ্ছিল না?’
‘তুই রাগ করছিস কেন দিভাই? আর রূপমদা যে তোর কানেকানে কি বলল, আমি কি সেসব জানতে চেয়েছি?’
বিস্ময়ে চোখ বড় বড় করে পৃথা বলে, ‘শোন,তোর রোজরোজ আমার পড়ার ওখানে যাবার দরকার নেই। আলাপ করাতে বলেছিলি, করিয়ে দিয়েছি। এবার তো একটু, আমাদের নিজেদের মধ্যে কথা বলতে দিবি। তুই থাকলে...’, বলতে গিয়েও থেমে যায় পূর্বা। ‘কি বললি? আমি থাকলে তোদের অসুবিধা হয় ?তুই আমায় এইরকম ভালবাসিস দিভাই? তুই একথা বলতে পারলি?’, পৃথা অনুযোগ করে। ‘হ্যাঁ, পারলাম। তুই কেন ওর সঙ্গে এত কথা বলিস ?ঢলাঢলি করিস?রুপম তোর বয়ফ্রেন্ড না আমার?’পূর্বার মুখে তখন লাগাম নেই। পৃথার চোখে কোথা থেকে যেন একরাশ জল চলে আসে ।অভিমানে মুখটা নামিয়ে নিয়ে, মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে চায়। পূর্বা বুঝতে পারে ,একটু বেশিই বলে ফেলেছে বোনকে। নিজেরই আফসোস হয় সেজন্য। পৃথার হাত ধরে, টেনে নেয় নিজের দিকে। গালে হাত দিয়ে চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলে, ‘সরি বোনু রাগ করিস না।‘ পৃথা ফোঁপাতে ফোঁপাতে দিদিকে বলে, ‘তুই রুপমদাকে বেশি ভালবাসিস, না আমাকে?’ পূর্বা চুপ হয়ে যায়, এ কথার কি উত্তর দেবে ? দোনামোনা শুরু হয় নিজের মনের মধ্যে। রুপমের প্রেমে তখন ও উড়ছে। আর পৃথা তার নিজের বোন, হৃদয়ের টুকরো,কিন্তু পৃথাও কি রূপমকে ভালবেসে ফেলেছে? ‘এত ভাবছিস কেন দিভাই? আগে তো এক সেকেন্ডে বলে দিতিস, আমাকে। আমি সব বুঝে গেছি দিভাই‘ অভিমানে পৃথা সত্যিই মুখ ঘুরিয়ে চলে যায়। পূর্বা মনে মনে ভেঙে পড়ে, সত্যিই তো পৃথা দিনের মধ্যে কতবার জিজ্ঞেস করত ওকে। এর তার নানা জনের নাম করে জিজ্ঞেস করত ,’তুই ওকে বেশি ভালবাসিস ,না আমাকে?’ পূর্বা যেই বোনকে আদর করে, গাল টিপে দিয়ে বলত, ‘তোকে, তোকে, তোকে।‘ পৃথা কি খুশিই না হত।অনাবিল হাসি আর আনন্দ খেলে যেত ওর চোখে মুখে।আসলে ও এটাই শুনতে চাইত আদরের দিভাইয়ের কাছ থেকে। আর কিছুতে এত খুশি হতে বোনকে দেখেনি পূর্বা। কিন্তু আজ ওর কি হল? কেন বলতে গিয়েও থমকে গেল? রুপমকে কি সে বোনের চেয়েও বেশি ভালোবাসে? না তা আবার হয় নাকি? রুপম আলাদা,ওর বয়ফ্রেন্ড। কিন্তু পৃথা তো ওর নিজের বোন ।আজ কেন যে সে কথা বলতে পারল না, ‘তোকে সবচেয়ে ভালোবাসি। তোকে, তোকে, তোকে‘, মরমে মরে যায় পূর্বা। চোখটা ওরও ভিজে যায়, বোনের পাগলামি দেখে। কিন্তু পৃথা ততক্ষণে চলে গেছে অভিমান করে।
পৃথার কিন্তু রূপমের প্রতি গোপন মুগ্ধতা থেকেই যায়। দুর্গামন্দিরের পশ্চিমে ,পাথরের উপর বসে, বিকেলের আলোয় যখন পূর্বা আর রুপমের প্রেম জমে উঠত, আড়াল থেকে মাঝে মাঝে নজর রাখত পৃথা। ঈর্ষা?হয়ত বা।আসলে মানুষের মন তো! তার উপর মেয়ে হয়ে জন্মেছে, স্বাভাবিক এই মুগ্ধতা। চোরাচাউনিতে বন্দী ,অক্ষম গোপন প্রেম, কতই তো মরে যায়।এও হয়ত তারই নামান্তর।
‘বোনু ,তুই এরকম? ছি ছি ।রুপমের দিকে কেন তাকিয়ে থাকিস বলতো?’, পূর্বা একদিন বলেই ফেলে।
‘কই, নাতো।‘
‘আমাকে লুকোবি? তুই রুপমের সঙ্গে কেন আমাকে লুকিয়ে কথা বলতে যাস? কেনইবা ওর সঙ্গে দেখা করার জন্য, ওর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকিস?ভাবছিস, আমি জানি না কিছু?’
‘আমি? কি বলছিস তুই!’ পৃথা থামাতে চায় দিদিকে।
‘থাম, আমার আর বুঝতে কিছু বাকি নেই। ভাবছিস আমি খুব বোকা, না রে ?কিচ্ছু বুঝতে পারি না?’
‘কি বলছিস,দিভাই? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না রে।‘
‘বুঝতে পারছিস না? ন্যাকা? তুই রূপমের বাড়ির সামনে দিয়ে রোজ ফিরিস কেন? ওখানে দাঁড়িয়ে থাকিস, ওকে লুকিয়ে-চুরিয়ে দেখিস ।নানা ছুতোয় কথা বলতে চাস। আমাকে ও সব বলেছে।‘
পৃথা চুপ করে থাকে।শুধু মৃদুভাবে বলে, ‘ও কিছু না।‘
‘শোন, আমি তোর থেকে পরিষ্কার জানতে চাইছি, তুই কি রুপমকে ভালবাসিস?’
‘আমি ?কি বলছিস দিভাই! রূপমদা তো তোর....’
‘চুপ কর। আমি তোর চোখ দেখেছি বোনু ।তুই শেষে রুপমের সঙ্গে ...’, আর কথা শেষ করতে পারেনা পূর্বা। ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে। ‘আমি আসছি দিভাই’, বলে পালিয়ে বাঁচে পৃথা। কি করবে, কি বলবে,ও নিজেও বুঝতে পারে না।
পৃথা বারবার বোঝায় নিজেকে, না, এটা ঠিক হচ্ছে না ,ওকে পিছিয়ে আসতেই হবে। মনে কোন দুর্বলতার স্থান নেই ।দিদিকে যে সে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে, তার সঙ্গে কোনো অন্যায় সে করতে পারবে না। সব ঠিকই ,পিছিয়েও সে আসে জোর করে,নিজেকে কষ্ট দিয়ে।তবু...
একদিন পূর্বা পৃথাকে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘বোনু ,তোকে সেদিন অনেক বকেছি,না?’ ‘হুঁ’, অভিমানী স্বর পৃথার ।
‘আর তোকে কখনও বোকব না। তুই আর আমার ওপর রাগ করে থাকিস না রে।‘
‘দিভাই আমি না, আর ঐ রাস্তা দিয়ে ফিরি না। রূপমদার বাড়ির সামনেও কখনো যাই না,তাকাইও না। বিশ্বাস কর ।‘
বোনের মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো ঘেঁটে দেয় পূর্বা। ‘জানি রে, তুই আমার বোনু, না? তোর মত এই দুনিয়ায় আর একটাও নেই ।‘
‘তুই আমাকে সবচেয়ে ভালবাসিস, না রে দিভাই?’
‘হ্যাঁ ,বোনু, তোকে, তোকে, তোকে।‘ এক মুহূর্ত সময় নেয় না পূর্বা। ‘আমি জানি, দিভাই‘, পৃথা হেসে বলে।
‘কিন্তু রুপম সবার থেকে আলাদা। ওকে আমি বিয়ে করব, জানিস? আর ক’টা বছর যেতে দে। ও না ইঞ্জিনিয়ারিংএ চান্স পেয়েছে ,জানিস?’
‘ওয়াও, কি দারুন খবর। রূপমদা পাস করেই চাকরি পেয়ে যাবে, আর তারপরেই তোদের বিয়ে হবে। না?’
‘হুঁ,তাইতো প্ল্যান আছে’
‘কিন্তু বাবা-মা ?ওরা যদি রাজি না হয়?’
‘ধুর।বাবা-মাকে রাজি করাব। ভাবছিস কেন?’
‘বাবা জানতে পারলে না, তোকে..’
‘তুই চুপ কর তো।বাবা যেন কিছুতেই জানতে না পারে।‘ পূর্বা মৃদু ধমক দেয় বোনকে। ‘কিচ্ছু জানবে না দিভাই’, কথা দেয় পৃথা ।
‘কিন্তু তুই আমাকে বিশ্বাস করিস না, তাই না? রুপমদাও না’
‘তোর গলাটা এরকম হয়ে গেল কেন রে ?তুই কি খুশি নোস, আমি রুপমের সঙ্গে প্রেম করি বলে?’
‘খুশি কেন হব না রে দিভাই?’
‘তুই কি রূপমকে এখনো পছন্দ করিস?’
‘পছন্দ না করার কি আছে? লাইক করতেও পারব না? তোর বয়ফ্রেন্ড বলে, তুই কি কিনে নিয়েছিস?’, পৃথা রেগে যায় ।পূর্বার কাছে এর কোন উত্তর নেই। তার হৃদয়ের টুকরো বোনটাকে তারও একটু অচেনা লাগে। বোন কি খুব কষ্ট পেয়েছে মনে মনে?পূর্বা জানে তারই পথ পরিস্কার করতে, বোন সরে গেছে রূপমের থেকে। পৃথার তো কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই। সেইজন্যই কি এত ঈর্ষা জন্মাল দিদির প্রতি? অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে বোনের দিকে। পৃথা চলে যায় মুখ ঘুরিয়ে।
ধীরে ধীরে পূর্বা আর পৃথার মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়। পৃথা ঈর্ষা করতে শুরু করে পূর্বার দামাল প্রেমকে। দুই বোনে ক্ষণিক মানসিক দূরত্বও তৈরি হয়। পূর্বা হয়ত বুঝতে পার একটু, ভালোবাসা দিয়ে ভোলাতে চেষ্টা করে বোনকে। বোন তো তার প্রাণাধিক প্রিয় ,কেউ নয় তার আগে। কিন্তু প্রেমের জোয়ারে ভাসতে শুরু করলে কোনকিছুই আর বেঁধে রাখতে পারে না কাউকে, প্রেমিকের চোখ দুটো ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না তখন।
তাই হল।কলেজে ভর্তি হবার পর, ওদের বাইকে করে ঘুরে বেড়ানো বেড়ে গেল। কোচিং কামাই করে প্রেম, আর তার ফলে অবধারিতভাবেই পূর্বার রেজাল্ট খারাপ হতে শুরু করল। প্রতীকবাবুর কানে এসেছিল কিছু কথা। একদিন বড় মেয়েকে ডেকে শুনিয়ে দিলেন দু'চার কথা। ব্যাস! এইটুকুই। পূর্বা মনে করল ছোট বোনই নিশ্চয়ই লাগিয়েছে বাবাকে ।দুই বোনে কথা বন্ধ, মনোমালিন্য, রেষারেষির শুরু সেই থেকে। হায়রে, রক্তের সম্পর্ক ,জন্মগত ভালোবাসা কোথায় গেল!
‘বোনু ,তুই ?শেষে তুই বাবাকে...’
‘বিশ্বাস কর দিভাই, আমি বলিনি বাবাকে।‘
‘বিশ্বাস করব তোকে? তুই বাবাকে লাগাসনি? নাহলে বাবা কি করে জানল?’
‘আমি কি করে জানব? নিশ্চয়ই কেউ দেখে ফেলেছে তোদের। আমি ছাড়া আর লাগানোর কি কেউ নেই নাকি?’
‘না’, চিৎকার করে ওঠে পূর্বা , ‘তুইই বাবার কানে দিয়েছিস। প্রথম থেকে তুই আমাদের সব কিছু জানিস। এত কথা বাবা জানল কি করে ?আমরা কোথায় যাই, কি করি ।এত খবর তুই ছাড়া আর কেউ জানে না।‘ ‘বিশ্বাস কর’, এবার কাঁদো-কাঁদো পৃথা ।
‘আমি বলিনি কিছু, আমি তো তোকে কথা দিয়েছিলাম,বল। এতদিন ধরে একটা কথাও বাবা জানতে পেরেছে?’
‘তুই জানিস,কি করেছিস? আমার কোচিং বন্ধ। কলেজ যাবার জন্য বাবা শম্ভুকাকুর টোটো ঠিক করে দিয়েছে। আর আমি কিভাবে দেখা করব রূপমের সঙ্গে?’, কেঁদে ফেলে পূর্বা, ‘তোর জন্য। সব তুই করেছিস । প্রথম থেকেই তুই চাইতিস না রুপমের সঙ্গে আমার অ্যাফেয়ার হোক। তুই নিজে সেজেগুজে যেতিস রুপমের বাড়ি, দেখা করতে।‘
‘না, দিভাই। সেসব তো অনেক পুরোনো কথা। আমি কেন চাইব না তোদের অ্যাফেয়ার? বিশ্বাস কর আমি আর ওসব...’
‘থাম তুই। শেষে তুই আমাকে ফাঁসালি? আমার বোন হয়ে? আমি ভাবতেও পারছি না। ঠিক আছে, আমিও দেখি, তুই কিভাবে আমাদের আটকাস।‘ রেগে গটগট করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় পূর্বা।
এত মান-অভিমান,টানাপোড়েন।তবু রক্তের ভালোবাসা মরে না, ভেতরে ভেতরে ঠিকই বইতে থাকে তার গোপন ফল্গুধারা। দুই বোনে যতই ঝগড়া-অভিমান হোক না কেন ,হয়ত মিটেও যেত একদিন ।পূর্বা বোনুর গাল টিপে দিয়ে, ঠিকই একদিন আবার বলে উঠত,’তোকে,তোকে,তোকে’, কিন্তু হল না।
তার আগেই বিজয়া দশমীর দিন সন্ধ্যায় ঝড়ের বেগে এলো সেই দুঃসংবাদটা। বাইক অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে রূপম -পূর্বার ।দামাল গতিতে কোথায় যেন যাচ্ছিল দুজনে মেনরোড ধরে ,লেন ভেঙে উল্টোদিক থেকে এসে পড়েছিল এক কালান্তক ডাম্পার। সব শেষ! রুপম হাসপাতালে যাবার আগেই, পূর্বা খুব লড়েছিল মৃত্যুর সঙ্গে। কিন্তু দু’দিন পরে সেও আর চোখ খুলল না, ঢলে পড়ল রুপমের চলার পথে। নিস্তব্ধতা নেমে এলো নিশ্চিন্তপুরে, বাড়ি বাড়ি অরন্ধন।দু’দিন ধরে কিচ্ছু খায়নি পৃথা। মা বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন, বাবা বাকরুদ্ধ। সবাই ঘিরে রেখেছে ওদের ।বাড়িতে শুধু কান্নার রোল,প্রতি পদে , নানা প্রেক্ষিতে ।স্মৃতি বড় অবুঝ ,মনটাও। কিছুতেই বাঁচতে দেবে না যেন। পাগলের মত হয়ে গেছে পৃথা। মনে তার ঝড়। দিদি নেই, ভাবতেও পারে না সে। এত আপনার জন, এইভাবে, দুম করে চিরতরে চলে যায় নাকি? বিশ্বাস হয় না পৃথার। সদর দরজার দিকে তাকিয়ে বাইরে চেয়ে থাকে ,লাল চোখ ঝাপসা হয়ে আসে ।এই বুঝি দিদি ফিরে এল। কেন, ফিরে আসবে না?
দু'দিন পরে পৃথা বাড়ির বাইরে প্রথম পা রাখে । বিকেলে পায়ে পায়ে চলে আসে সেই দুর্গা মন্দিরের কাছে ।এক অদৃশ্য অমোঘ টানে ,এগিয়ে চলে পাথরের টিলাটার কাছে, যেখানে বসে থাকত রুপম আর পূর্বা। কতদিন, কত প্রেম জমে উঠত ওদের এখানেই, লুকিয়ে লুকিয়ে দেখত পৃথা ,অদম্য এক আকর্ষণে। হঠাৎ ওর পা আটকে যায় মাটিতে। একটা পাথর, তার ওপর ক্ষোদাই করা নাম "রুপম পূর্বা"। একটু যেন হালকা হয়ে গেছে লেখাটা ক'দিনে। চোখ সরাতে পারে না পৃথা ।ও এই লেখা ক্ষোদাই করতে দেখেছে ওদের। ছোট একটা পাথরের মাথাটা ঘষে ঘষে ধার করে নিয়ে লিখেছিল ওরা । দুর্গা মন্দিরের আড়াল থেকে দেখেছিল পৃথা ।এই সেই লেখা। অজান্তে চোখ দিয়ে জলের ধারা নেমে আসে পৃথার, পাগলের মত খোঁজে আর একটা পাথর। তারপর ছুটে যায় সেই পাথরের কাছে, আর জীবনের যত রাগ- দুঃখ-অভিমান-অনুশোচনা সব যেন ঘায়ে ঘায়ে নেমে আসে সেই পাথরের উপর । ফোঁপাতে থাকে ‘দিভাই ,তুই এইখানে ? তুই আমাকে ক্ষমা করে দে দিভাই, তুই কোথায়, দিভাই?আমাকে আর ভালবাসিস না ?’,বারবার বলতে থাকে পৃথা। যেন এখনই জ্ঞান হারাবে, উত্তেজনায় ।আর অজানা এক পাগলামি আর আবেগের বশে,হাঁফাতে হাঁফাতে,অপটু হাতের আঘাতে, রুক্ষ পাথরের উপর ফুটিয়ে তুলতে থাকে,প্রায় মুছে যাওয়া সেই দুটো নাম।ঘষে ঘষে সেই লেখা আবার জ্বলজ্বলে করে তোলে ও।মানুষ দুটো তো নেই,শুধু পরিষ্কার হয়ে যায় পাথরে ক্ষোদাই করা দুটো নাম "রুপম পূর্বা"। দিনের আলো তখন ঢলতে শুরু করেছে মন্দিরের আড়ালে।আকাশ বাতাস কেঁদে উঠছে। আর দিগন্ত থেকে হয়ত তখনই একটা না বলা কথা উঠে আসতে চায়,কিন্তু পারে না,’তোকে,তোকে,তোকে।‘
Tuesday, April 9, 2024
Disease rates increasing in youngsters because of 'sped up maturing,' new review finds: 'Exceptionally alarming'
Disease rates increasing in youngsters because of 'sped up maturing,' new review finds 'Exceptionally alarming'
Sped-up maturing — when somebody's organic age is more prominent than their sequential age
— could expand the gamble of malignant growth cancers.
That is as per new exploration introduced for this present week at the American Relationship for Malignant Growth Exploration (AACR) Yearly Gathering in San Diego, California.
"All things considered, both disease and maturing have been seen basically as worries for more seasoned populaces," Ruiyi Tian, MPH, an alumni understudy at Washington College Institute of Medication in St. Louis and one of the review analysts, told Fox News Computerized.
Malignant growth CASES At the center of attention AS WHITE HOUSE Pronounces APRIL 2024 'Disease Avoidance AND EARLY Identification MONTH'
"The acknowledgment that malignant growth, and presently maturing, are becoming critical issues for more youthful socioeconomics over the course of the last many years was startling."
In the review, analyze in patients more youthful than 55 years of age were viewed as beginning stage diseases.
Young lady with disease
The new investigation discovered that those with a higher organic age had a 42% expanded chance of beginning stage cellular breakdown in the lungs, were 22% more inclined to beginning stage gastrointestinal malignant growth — and had a 36% higher gamble for beginning stage uterine disease. (iStock)
The analysts broke down information from 148,724 individuals utilizing the UK Biobank data set.
They assessed every individual's natural age involving nine biomarkers in the blood — then contrasted that with their sequential age.
Heartbreaking Malignant growth Misfortune Rouses NEW YORK TECH Business visionary TO ADDRESS 'Pressing Clinical NEED'
Those with a higher organic age had a 42% expanded hazard of beginning stage cellular breakdown in the lungs, were 22% more inclined to beginning stage gastrointestinal malignant growth, and had a 36% higher gamble for beginning stage uterine disease.
The specialists likewise resolved that individuals brought into the world after 1965 were 17% bound to encounter sped up maturing than those brought into the world in prior many years.
disease patient glances out window
Analyze in patients more youthful than 55 years of age were viewed as beginning stage tumors. The expectation is that the new discoveries will prompt mediations to slow natural maturing as "another road for disease avoidance," the analysts said. (iStock)
"The key discoveries feature that sped up maturing is progressively predominant among progressive birth partners, possibly filling in as an essential gamble component or middle person for different ecological and way of life related risk factors prompting beginning stage disease," Tian said in an email to Fox News Computerized.
"This disclosure moves us to reevaluate the basic reasons for the rising rate of beginning stage tumors among more current ages," he added.
"Ongoing ages should turn out to be more wellbeing cognizant and think about the ramifications of sped up maturing."
The expectation is that these discoveries will prompt intercessions to slow organic maturing as "another road for disease counteraction," the analysts noted, joined with screening endeavors custom-made to more youthful people.
"Late ages actually must turn out to be more wellbeing cognizant and think about the ramifications of sped up maturing," Tian said.
Disease AND PRINCESS KATE: Significant SCREENINGS TO Zero in ON FOR BEST Wellbeing
In ongoing examinations, the exploration group will attempt to decide the elements that drive sped up maturing and beginning stage malignant growths, which will assist with the improvement of more customized disease counteraction methodologies, as per a public statement.
One restriction of the review is that all members were from the U.K., Tian noted.
"Consequently, our discoveries may not be straightforwardly summed up to populaces in different nations or to racial and ethnic minority bunches not addressed in the partner."
Dr. Brett Osborn
Dr. Brett Osborn, a Florida nervous system specialist and life span master, frequently examines the idea of sped up maturing with his patients, he told Fox News Computerized. (Dr. Brett Osborn)
Dr. Brett Osborn, a Florida nervous system specialist and life span master, frequently examines the idea of sped up maturing with his patients.
"Since an individual is 40 years of age sequentially doesn't imply that they are 40 years of age biochemically," Osborn, who was not engaged with the new exploration, told Fox News Computerized.
Sunday, April 7, 2024
Friday, April 5, 2024
Thursday, April 4, 2024
Tuesday, April 2, 2024
Sea Moss: Benefits, Nutrition, and Preparation
Sea Moss: Benefits, Nutrition, and Preparation Are you looking for a nutrient-dense superfood that can revolution...
-
মুম্বাইয়ে যোগ দিচ্ছেন সূর্যকুমার যাদব https://shrinkme.site/vQJuF
-
রূপপুরে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আলোচনা